বর্তমান পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায়
সাড়ে সাতশ কোটি। যার বেশিরভাগই নারী। রাস্তা-ঘাটে, কর্মস্থলে,
বিনোদনের
জায়গায়- কোথায় নেই তারা? কিন্তু একটা সময় ছিল যখন
নারী কেন, পৃথিবীতে মানুষই ছিল হাতে গোনা। জানতে
ইচ্ছে করে না এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রথম নারী কে?
অন্তত
গবেষকেরা যাদের খোঁজ আজতক পেয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে তো জানাই যায়। আসুন জেনে নিই পৃথিবীতে নারী জাতির অগ্রজদেরকে!
আজ রইলো প্রথম ৫ জনের কথা।
১. আর্দি
আর্দিপিথেকাস
রামিডাস- প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন বছর আগে ইথিওপিয়ায় বসবাসরত এই নারীকেই পৃথিবীর সবচাইতে পুরোনো মানবীর খুলির অধিকারী বলে মনে করা হয়। তার শরীরে অংশগুলো, যেমন- হাড়
বা দাঁত মোট ১২৫ খন্ডে ছড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। আর্দির উচ্চতা ছিল ১.২ মিটার আর
ওজন প্রায় ৫০ কেজি। ফল, পাতা ও ছোটখাটো প্রাণীর ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা আর্দির বড়বড় আঙ্গুলসহ হাত ও সামান্য কিছু মস্তিষ্ক ছিল। শিম্পাঞ্জি আর মানুষের একটা মিশ্র সংস্করণ ছিল এই নারী। বর্তমানে তার শরীর ইথিওপিয়ার
জাতীয় জাদুঘরে রাখা আছে।
২. লুসি সসময়কার জনপ্রিয় প্রাচীন আরেক নারী লুসিকে থুঁজে পাওয়া যায় ১৯৭৪ সাথে। ইথিওপিয়াতেই। এর আগে বিশেষজ্ঞরা মনে করতেন এর আগে মানুষের বুদ্ধি কেবল সোজা হয়ে হাঁটতে পারার ভেতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু লুসি তাদের সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে দেয়। আর্দির আবিষ্কারের আগে লুসি ছিল সবচাইতে প্রাচীন নারী যে কিনা ৩.২ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে বাস করত। তবে ৩.৫ ফুট লম্বা লুসির ওজন ছিল মাত্র ২৭ কিলোগ্রাম। বাদাম, ফল, বীজ আর পাখির ডিম খেয়ে নিজের জীবন যাপন করত সে। মৃত্যুর সময় ২১ বছর বয়স হয়েছিল লুসির।
৩. এক্স
ওম্যান অনেকটা
মার্ভেলের কমিকের চরিত্রের মতন শোনালেও বাস্তবে এই নারী ছিল বর্তমান সার্বিয়াতে বসবাস করা
একজন। যার জন্ম হয়েছিল প্রায় ৪০,০০০ বছর
আগে। প্রথমটাই বড় কোন মানুষ মনে করা
হলেও পরবর্তীতে জানা যায় এক্স ওম্যান আদতে একটি শিশু নারীর নাম। যার শরীরের
কেবল গোলাপী আঙ্গুলকেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমান অষ্ট্রেলিয়ার আদিবাসী আর
নিউ গুয়েনার মেলানেসিয়ানদের সাথে এই নারীর খানিকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
৪. দ্যা
রেড লেডি উত্তর স্পেনের এল মিরন গুহা থেকে খুঁজে
পাওয়া যায় এই রেড লেডিকে। ১৮,৭০০ বছর আগে পৃথিবীতে বসবাস ছিল এই নারীর। মরার সময় ৩৫-৪০
বছর বয়স হয়েছিল তার। তাকে রেড
লেডি নাম দেওয়ার পেছনে বিশেষজ্ঞদের যুক্তি হচ্ছে
নারীটির শরীরের লালচে আবরণ। তবে সেটা পরীক্ষা করে শরীরের
ভেতরের নয়, বাইরের আবরণ বলেই মনে করেছেন তারা। তাদের মতে, ধর্মীয় কোন কারণেই এই লালচে গুঁড়ো
মাখা হয়েছিল নারীটির শরীরে।
৫. দ্যা
হবিট ২০০৩ সালে
ইন্দোনেশিয়ার এক দ্বীপে খুব ছোট্ট নতুন ধরনের একটি মানব প্রজাতিকে খুঁজে পান প্রত্নতাত্বিকেরা। হবিট নামে নামকরণ করা হয় নারীটির। যে কিনা ১৮,০০০ বছর আগে জীবিত ছিল। তবে
অত্যন্ত ছোট্ট এই
মানবীর উচ্চতা মাত্র ১ মিটার, যেটা কিনা
সবার জন্যে অনেকটা আশ্চর্যের বিষয়ই বটে। তবে ছোট
হলেও হবিটের মাথাতেও আছে মস্তিষ্ক। হবিটের মাথায় আঙ্গুর ফলের সমান মস্তিষ্কের
খোঁজ পান বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র- 10 intriguing prehistoric women