শনিবার, ২৮ জুন, ২০১৪

উদ্ভট দর্শনের অবিশ্বাস্য ১০টি প্রানি

আমাদের এই পৃথিবীতে কত প্রজাতির কত ধরনের প্রানি আছে তাই না। এর মধ্যে কত গুলির সাথেই বা আমরা পরিচিত? পরিচিতর কথা বাদ দেন এখন পর্যন্ত সকল প্রজাতির প্রানি আবিস্কার করাই সম্ভব হয়ে উঠে নাই। আজ আপনাদের এমন সব উদ্ভট দর্শনের ১০টি প্রানিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব যাদের অস্থিত্ব যে আছে এটা বিশ্বাস করতেই আপনার কষ্টো হবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক, তবে তার আগে একটা কথা এখানে যত গুলি প্রানি সম্পর্কে আলোচনা করব তার কোনটিরই বাংলা নাম আমার জানা নাই, তাই এখানে ইংরেজি নাম ব্যাবহার করব তবে আপনাদের কারো যদি এই প্রানি গুলির বাংলা নাম জানা থাকে তাহলে অবশ্যই জানাবেন।
১০) Silkie:
Silkie হচ্ছে এক প্রজাতির মুরগী। এই মুরগীর দেহ অন্যান্য মুরগীর মত পালক দিয়ে নয় বরং লম্বা লম্বা লোম দিয়ে ঢাকা। যার উপর হাত বুলালে মনে হবে যেন রেশমি কাপড়ের উপর দিয়ে হাত বুলাচ্ছেন। শুধু লোম বাদেও আরো অনেক কিছু আছে যা একে অন্যান্য মুরগী থেকে আলাদা করে রেখেছে। যেমনঃ এই Silkie এর গায়ের চামড়া, মাংস এবং হাড় সব কিছুর রঙ কালো, আবার এর কান হয় নীল রঙের, এছাড়া এই Silkie এর পায়ে আছে ৫টি আংগুল যেখানে অন্যান্য মুরগীর থাকে মাত্র ৪টি আংগুল। এই Silkie এর লোমের রঙ বিভিন্ন রঙের হতে পারে, তবে খয়ড়ি আর ছাই বর্নের বেশির ভাগ হয়ে থাকে।
 
 ০৯) Sunda Flying Lemur:
এর নামের সাথে যদিও Flying Lemur লাগানো আছে তারপরেও এটি কিন্তু লেমুর না এমন কি এটি উড়তেও পারে না। তবে এটি এক গাছ থেকে আরেক গাছে বাতাসে ভেসে ভেসে যেতে পারে। কি অবাক হচ্ছেন? আরে এর শরীর এমন ভাবে বানানো যে এটি যখন গাছের উপর দিয়ে লাফ দেয় তখন এর দেহ অনেকটা ঘুড়ির মত কাজ করে, আর তাতে করেই এক গাছের কান্ড থেকে আরেক গাছের কান্ডে খুব সহজেই পৌছে যেতে পারে। এদের প্রিয় খাবার হল গাছের কচি পাতা, ডাল আর বিভিন্ন ধরনের ফল। যদিও এরা খুবই দক্ষতার সাথে গাছে চড়তে পারে তারপরেও মাটিতে কিন্তু এরা বেশ নিরীহ হয়ে পরে, কেনন এরা তেমন দ্রুত দৌড়াতে পারে না। এদের মূল বাস ইন্দোনেশিয়া, মালায়শিয়া, থাইল্যান্ড এবং সিংগাপুরে।
 ০৮) Dhole:
Dhole এর আরো দু'টি পরিচিত নাম আছে,  "Asiatic wild dog" এবং "Indian wild dog"। এরা খুবই সামাজিক জীব। দলবদ্ধ ভাবে বসবাস করে, আর এদের মূল বাসস্থান দক্ষিন এবং দক্ষিন পূর্ব এশিয়া। এরা ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে শিকার করে। এদের মূল শিকার হচ্ছে এদের থেকে আঁকারে ছোট যে কোণ প্রানি। এরা সাধারনত মানুষ দেখলে পালিয়ে যায় তবে দলবদ্ধ ভাবে থাকলে এরা বেশ সাহসী হয়ে ওঠে এবং এক সাথে মাঝে মাঝে জলহস্তী, মহিষ এমন কি বাঘের উপরেও হামলা করে বসে।

০৭) Markhor:
Markhor হচ্ছে বেশ বৃহৎ আকৃতির ছাগল। এদের খোঁজ মিলে সাধারনত আফগানিস্থান, পাকিস্থান, উজবেকিস্থান এবং কাজাকিস্থানে। এদের সিং হচ্ছে সব থেকে আকর্ষনিয় অংগ। এরা দেখতে যতটা চমৎকার হোক না কেন এরা কিন্তু ইতি মধ্যেই বিলুপ্ত প্রায় প্রানির কাতারে নাম লিখিয়েছে। এই প্রজাতির ছাগল বর্তমান বিশ্বে আছে মাত্র ২৫,০০০টি। এই Markhor কিন্তু পাকিস্থানের জাতীয় প্রানি (রতনে রতন চিনে)। পাকিস্থানের কল্পকথা অনুসারে এই Markhor সাপ মেরে তা খেয়ে ফেলতে পারে। যদিও এর বাস্তব কোন প্রমান নেই।
 ০৬)  Snub-nosed Monkey:
এরা বিশ্বের সুন্দর যত গুলি বানরের প্রজাতি আছে তার মধ্যে অন্যতম একটি প্রজাতি। Snub nosed Monkey নাম করন করা হয়েছে এদের নাকের কারনে, এদের নাক বেশ খাট হয় আর অন্যান্য বানরের মত নাকের ছিদ্র নিম্নমুখি না হয়ে সম্মুখ মুখি হয়। এদের মুখ নীল রঙের হলেও এদের গায়ের লোম ভিন্ন ভিন্ন রঙয়ের হয়ে থাকে। বিশেষ করে এদের ঘাড় এবং পিঠের দিকের লোমের রঙ ভিন্ন ভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এরা লম্বায় ৫১ থেকে ৮৩ সেঃমিঃ পর্যন্ত হয়ে থাকে আর এদের লেজ লম্বায় ৫৫ থেকে ৯৭ সেঃমিঃ পর্যন্ত হয়ে থাকে।
 ০৫) Raccoon Dog:
Raccoon Dog এর আরেক নাম Tanuki। এরা পূর্ব এশিয়ার আদি প্রানি গুলির মধ্যে একটি প্রজাতি। এই প্রজাতির বৈজ্ঞানিক নাম genus Nyctereutes। এদের নাম Raccoon Dog হবার মূল কারন হল এদের মুখের রঙ এবং আকৃতি অনেকটাই Raccoon এর মত যদিও দেহ আকৃতি কুকুরের মত। এদের মুখের আকৃতি Raccoon এর মত হলেও Raccoon Dog আর Raccoon কিন্তু কোন ভাবেই নিকট আত্মীয় না। এরা খুব ভাল গাছে চড়তে পারে এবং নিয়মিত ভাবেই তারা গাছে চড়ে। বলতে পারেন এটি এমন এক প্রজাতির কুকুর যা মাটির তুলনায় গাছে গাছে ঘুড়ে বেড়াতে বেশি পছন্দ করে।
 ০৪) Maned Wolf:
Maned Wolf হচ্ছে দক্ষিন আফ্রিকার আদি প্রানি গুলির মধ্যে সব থেকে বেশি সংখ্যায় আছে। এদের দেখলে মনে হবে যেন এরা লাল শিয়াল আর হরিনের মধ্যকার সঙ্কর প্রজাতি। দেখতে লোমশ দেহ, শিয়ালের মত লম্বা মুখ আর হরিনের মত লম্বা লম্বা পা। যদিও দেখতে সঙ্কর প্রজাতির মত কিন্তু বাস্তবে এরা মৌলিক প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রানি। এদের সাধারনত খুঁজে পাওয়া যায় লম্বা ঘাস আর ঝোপ ঝাড়ে আবৃত অঞ্চলে। ধারনা করা হয় লম্বা লম্বা ঘাস আর ঝোপ ঝাড়ের মধ্য দিয়ে যাতে সহজে চলতে পারে তাই এদের পা বিবর্তন ধারায় এত লম্বা হয়েছে। আর এরা কিন্তু শিয়াল প্রজাতির মধ্যে সব থেকে উচু হয়ে থাকে।
 ০৩) Gerenuk:
Gerenuk নিয়ে এর আগে "অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর কিছু প্রানী" লেখার মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম। তাই এখনে আর করলাম না।
 ০২) Amazonian Royal Flycatcher:
Amazonian Royal Flycatcher পাখি হচ্ছে চড়ুই প্রজাতির tyrant flycatcher পরিবারের অন্তর্গত প্রানি বা পাখি। এদের মুলত খুঁজে পাওয়া যায় আমাজান বনের একদম কেন্দ্রে লম্বা লম্বা আর মোটা মোটা গাছ দিয়ে ঘেড়া অঞ্চলে। যদিও এদের সচারাচর দেখা যায় না তারপরেও এদের বিলুপ্ত হওয়া নিয়ে তেমন চিন্তার কিছু নেই। কেননা এরা অনেক কম সংখ্যায় এক এলাকায় পাওয়া গেলেও বিশ্বের প্রায় প্রতিটি বনাঞ্চলেই এদের পাওয়া যায়। এরা লম্বায় ৬.৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এদের মূল খাবার হল বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ।
০১) Zebra Duiker:
Zebra Duiker হরিণ প্রজাতির প্রানি হলেও আঁকারে কিন্তু অন্যান্য যে কোন হনিণের থেকে অনেক ছোট হয়ে থাকে। এদের মূল বাস আইভরি কোষ্টে, এছাড়াও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে এদের খুঁজে পাওয়া যায়। তৃন ভোজি এই প্রানির দেহ লাল অথবা সোনালী রঙয়ের হয়ে থাকে। এর পিঠে থাকে জেবরার মত কালো ডোরা কাটা দাগ, এছাড়া পায়ে কালো দাগ থাকে সাথে মুখের সম্মুখ ভাগে কালো দাগ থাকে। এরা লম্বায় ৯০ সেঃমিঃ, উচ্চতায় ৪৫ সেঃমিঃ আর ওজন ২০ কেজির মত হয়ে থাকে। মদ্যা Zebra Duiker মাথায় খাড়া খাড়া ৪.৫ সেঃমিঃ লম্বা শিং থাকে আর মাদি Zebra Duiker মাথায় মদ্যার অর্ধেক উচ্চতার শিং থাকে। এরা মূলত রেইন ফরেষ্টের নিম্ন ভূমিতে বসবাস করতে পছন্দ করে।