বাওবাব গাছ (Baobab Tree) যদিও এর কোন বাংলা নাম নেই, তারপরেও অভিধান ঘাটলে
যে নাম বের হয় তা হল "বাঁদুরে রুটির গাছ" আর "আফ্রিকার একজাতীয় সুবিশাল
কাণ্ডবিশিষ্ট এবং বড় শাঁসালো ফল ধরা গাছ"। তবে আফ্রিকান ভাষায় এই বাওবাব
নামের অর্থ হল উল্টানো অর্থাৎ Baobab Tree এর মানে হল "উল্টানো গাছ"। এরকম
নাম দেখে আবার অবাক হলেন? আসলে গাছ গুলা দেখলে মনে যেন গাছ গুলিকে কেউ উলটা
ভাবে মাটিতে গেছে রেখেছে। আর তাই এর নাম এরকম।
এই বাওবাব গাছ পাওয়া যায় আফ্রিকা এবং অষ্ট্রেলিয়াতে। আঞ্চলিক লোক গল্পে এই
গাছ নিয়ে দারুন মজার একটা ঘটনার প্রচল আছে, সৃষ্টিকর্তা যখন এই গাছ সহ
অন্যান্য গাছকে ধরনিতে পাঠালেন এবং তাদের নির্দেশ দিলেন স্থির হয়ে থাকার
জন্য তখন সব গাছ স্থির হয়ে থাকলেও এই বাওবাব গাছ নড়াচড়া করত, তাই
সৃষ্টিকর্তা উপুর করে এই গাছকে মাটির সাথে গেথে দিলেন। যাতে আর নড়াচড়া করতে
না পারে। এই কারনে এই গাছের নাম বাওবাব বা উলটা গাছ।
এই বাওবাব গাছ উচ্চতায় ১৬ থেকে ৯৮ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে আর ব্যাস ২৩ থেকে
৩৬ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রকান্ড কর্ক আকৃতির এই কাঠে আগুন জ্বালানো বেশ
কঠিন হলেও আঁশ যুক্ত এই কাঠ ব্যাবহার করা হয় দড়ি এবং কাপড় তৈরির জন্য। আর
এর পাতা ভেজস ঔষধ হিসেবে ব্যাহৃত হয়। আর এই বাওবাব গাছের ফলের নাম "বানরের
রুটি" (Monkey Bread)। ফলের নাম অদ্ভুদ হলেও এই ফল কিন্তু বেশ কাজের। এই
ফলে প্রচুর পরিমানে "ভিটামিন সি" থাকে। এই গাছ তার প্রকান্ড দেহের মধ্যে শত
লিটারের উপরে পানি সংরক্ষন করতে পারে ফলে উতম্প গ্রীস্ম অঞ্চলে এই গাছের
বেঁচে থাকতে কোন সমস্যা হয় না।
একটি পূর্ন বয়স্ক বাওবাব গাছের ভিতরে অনেকটা ফাঁকা থাকে যা বন্য প্রানীরা
নিজেদের বাসস্থা হিসেবে ব্যাবহার করে, এছাড়া মানুষেরাও অনেক সময় এই জায়গা
নিজেদের প্রয়োজনে ব্যাবহার করে।
কি অদ্ভুত আর কত কাজের না এই বাওবাব গাছ। একদিকে যেমন দড়ি আর জামা তৈরিতে
ব্যাবহার হয় তেমনি এর ফল থেকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি পাওয়া যায় আবার এই
গাছের মধ্যকার ফাঁকা জায়াগায় অনেক বন্যপ্রানী বাসা বানায়। উল্টা গাছ হলেও
বেশ কাজের। কি বলেন? যা হোক, চলুন তাহলে এই গাছের আরো কিছু ছবি দেখে নেওয়া
যাক।
সহস্র বছর বয়স্ক বাওবাব গাছ
সহস্র বছর বয়স্ক এই বাওবাব গাছ পাওয়া গেছে মাদাগাস্কার দ্বীপে।